সোনাইমুড়ি উপজেলা বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা, এটি ২০০৫ সালে গঠিত হয়েছে। বেগমগঞ্জ উপজেলা ভেঙ্গে সোনাইমুড়ি উপজেলা গঠিত হয়েছে।
অবস্থান |
আয়তন: ১৭০.৪২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০২´থেকে ২৩°০৬´উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০০´থেকে ৯১°১৩´পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। |
প্রশাসনিক এলাকা |
উত্তরে কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে বেগমগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে সেনবাগ উপজেলা এবং পশ্চিমে চাটখিল উপজেলা। ১০ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই উপজেলা। ইউনিয়নগুলো হল আম্বরনগর, আমিশাপাড়া, চাষীরহাট, জয়াগ, দেউটি, নাটেশ্বর, নদনা, বজরা, বড়গাঁও, সোনাপুর। একমাত্র পৌরসভা টি হল সোনাইমুড়ি পৌরসভা। |
ইতিহাস |
=== প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ === বজরা শাহী জামে মসজিদ (১১৫৩ হিজরী), শ্রী শ্রী গধাদর কুন্ড তীর্থস্থান, উপমহাদেশের ধর্ম যাজক মরহুম মাওলানা কারামত আলী জইনপুরী, চনুয়া (পশ্চিম এনায়েতপুর), আমিশাপাড়া বারাহি মন্দির (আমিশাপাড়া), নবাবগঞ্জ জামে মসজিদ (বজরা), শাহ মিয়াম্বর (র:) মাজার (বজরা), সোনাইমুড়ী কালি মন্দির দেবালয় (সোনাইমুড়ী), সোনাইমুড়ী উপজেলার প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- কাশীপুর মোহাম্মদীয়া ফাজিল মাদ্রাসা (স্থাপিত-১৮৮২, প্রতিষ্ঠাতা- মরহুম মাওলানা ইব্রাহীম), সোনাইমুড়ী ফয়েজিয়া এতিমখানা,প্রতিষ্ঠাতা- আলহাজ্ব হযরত মাওলানা ফজলুল হক আল কাদেরী (র:), সোনাইমুড়ী পৌরসভা (স্থাপিত-১৯৫৪), সোনাইমুড়ী অন্ধ কল্যাণ সমিতি, স্থাপিত- ১৯৭৮ খ্রি:, সোনাইমুড়ী, নোয়াখালী।
=== মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি === ১৯৭১ সালে এ উপজেলা ২ নং সেক্টরের অধীন ছিল। ২২ এপ্রিল ১৯৭১ বৃহস্পতিবার সকাল ১১:০০টায় পাক বাহিনী সোনাইমুড়ীতে প্রবেশ করে। ১১ মে ১৯৭১ সালে সোনাইমুড়ির বোগদাদ (বগাদিয়া) নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ লড়াইয়ে প্রায় ২০ জন পাকসেনা নিহত হয়। এছাড়াও এ লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৭ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
=== ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান === মসজিদ ১৬৫, মন্দির ৬, মাযার ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: নবাবগঞ্জ জামে মসজিদ (স্থাপিত- ৯২৩ হি:, ১৫০২খ্রি:) বজরা। বজরা শাহী জামে মসজিদ (১১৫৪ হিজরী, ১৭৪১ খ্রি:), বজরা। সোনাইমুড়ি জামে মসজিদ (স্থাপিত- ১৯২৬), সোনাইমুড়ী। গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট।
|
জনসংখ্যার উপাত্ত |
মোট জনসংখ্যা ২৯০৮৪৬; পুরুষ ১৪১০২৯, মহিলা ১৪৯৮১৭।
সম্প্রদায়সমূহ : মুসলিম ২৮১৩৬৫ জন, হিন্দু ৯৩০৯ জন, বৌদ্ধ ১৩ জন, খ্রিস্টান ১১৪ জন, অন্যান্য ৪৫ জন,
|
শিক্ষা |
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৫.৭৭%; পুরুষ ৫৬.২৪% ও মহিলা ৫৫.৩২%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৪, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬, মাদ্রাসা ১৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সোনাইমুড়ি ডিগ্রী কলেজ (১৯৭০), সোনাইমুড়ি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), বজরা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), সোনাইমুড়ি হামিদিয়া আলিয়া মাদ্রাসা (১৯২৬)। |
ব্যাক্তিত্ব |
|
অর্থনীতি |
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ২৭.৩২%, অকৃষি শ্রমিক ২.০৬%, শিল্প ০.৬৩%, ব্যবসা ১৬.৪৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৬০%, চাকরি ১৮.১৫%, নির্মাণ ১.২৯%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১৪.৩৮% এবং অন্যান্য ১৫.৭৩%। হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩০, মেলা ২। সোনাইমুড়ি হাট, থানার হাট, কামারের হাট, নদনা হাট, কাশিপুর হাট, শান্তির হাট, লালমিয়ার হাট, জয়াগ বাজার, বজরা স্টেশন বাজার, মুসলিমগঞ্জ বাজার, সোনাপুর বাজার, বাংলা বাজার ও আমিশাপাড়া বাজার উল্লেখযোগ্য। শিল্প ও কলকারখানা চালকল, বরফকল, করাতকল, বিস্কুট কারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা। কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, সুচিশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ। কৃষি:কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬০.৩৮%, ভূমিহীন ৩৯.৬৯%। প্রধান কৃষি ফসল ধান, সুপারি, সরিষা, ডাল, শাকসবজি। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, অড়হর, চীনা। প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, নারিকেল, কলা, জাম, পেয়ারা, পেঁপে, সুপারি।
|
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৯৬.৫৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭৩২.৩৯ কিমি। বিলুপ্ত বা বিলুপ্ত প্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, মহিষের গাড়ি।
সূত্র:বাংলাপিডিয়া
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস