Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব-এঁর ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে ই-পোস্টার-১
বিস্তারিত

বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতিটি ধাপে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী হিসেবে নয়,
একজন নীরব দক্ষ সংগঠক হিসেবে যিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন এবং বঙ্গবন্ধুকে হিমালয় সমআসনে অধিষ্ঠিত করেছেন তিনি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।

১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বাংলার মানুষের কাছে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার নাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় তো বটেই বঙ্গবন্ধুর পুরো রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো পাশে ছিলেন তিনি। সে কারণেই একটি জাতির মনে স্বাধীনতার স্বপ্ন বপণ করে এর স্বাদও এনে দিতে পেরেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার রাজনৈতিক দর্শন ও আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে পেছন থেকে কাজ করেছেন শেখ মুজিবের প্রিয় রেণু। বঙ্গবন্ধু, বাঙালি ও বাংলাদেশ যেমন একই সূত্রে গাঁথা, তেমনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবও পরস্পর অবিচ্ছেদ্য নাম।

যখনই আমরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কথা বলি তখনই বঙ্গমাতার নাম প্রচ্ছন্নভাবে চলে আসে। পারিবারিক সূত্রে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। খোকা থেকে মুজিব, মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু এবং সবশেষে বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হয়ে ওঠার পেছনে যে নারীর অবদান অনস্বীকার্য তিনি আর কেউ নন, তিনি আমাদের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধু তার জীবনের পুরোটা সময় ব্যয় করেছেন জনগণের সেবায়, দেশের কল্যাণে। এর মধ্যে বেশির ভাগ সময় বঙ্গবন্ধুকে কাটাতে হয়েছে জেলে। আর সেই সময়গুলোতে কাণ্ডারির মতো হাল ধরেছিলেন বেগম মুজিব।

১৯৬৬ সনের ছয় দফা আন্দোলনের পক্ষে জনসমর্থন আদায় ও জনগণকে উদ্ধুদ্ধ করতে লিফলেট হাতে রাস্তায় নেমেছিলেন বঙ্গমাতা। এসময় তিনি নিজের অলংকার বিক্রি করে সংগঠনের প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের নেপথ্যেও ছিল তার সঠিক দিক নির্দেশনা। আন্দোলনের উত্তাল সময়গুলোতে নিজ বাড়িতে পরম মমতায় নির্যাতিত নেতা-কর্মীর আত্নীয় স্বজনদের আপ্যায়ন করতেন, সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনে ব্যবস্থা নিতেন। আশাহত নেতাকর্মীরা খুঁজে পেতেন আশার-আলো, আন্দোলনের জ্বালানি আসতো বেগম মুজিবের আশাজাগানিয়া বক্তব্য থেকে। শহীদ পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যক্তিগতভাবে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন তিনি।

স্বাধীনতার পর বীরাঙ্গনাদের উদ্দেশ্যে বঙ্গমাতা বলেন, ‘আমি তোমাদের মা।’ অনেক বীরাঙ্গনাকে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দিয়ে সামাজিকভাবে মর্যাদাসম্পন্ন জীবনদান করেন তিনি।

বাঙালির অধিকার আদায় ছাড়া শেখ মুজিবের কাছে প্রধানমন্ত্রীত্ব বা ক্ষমতার কোনো আকর্ষণ ছিলো না। বঙ্গমাতাও সেই আদর্শে নিজেকে ও নিজের সন্তানদের গড়ে তোলেন। সহধর্মিণী হিসেবে নয়, রাজনৈতিক সহকর্মী হিসেবে আজীবন প্রিয়তম স্বামী শেখ মুজিবুর রহমানের ছায়াসঙ্গী ছিলেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি ইতিহাসের কালজয়ী মহানায়ক শেখ মুজিবের অনুপ্রেরণাদায়িনী হয়ে পাশে ছিলেন। নিয়তির কী নিষ্ঠুর পরিহাস ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে জীবন দিতে হয়ে বঙ্গমাতাসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্যকে।

বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলার জনগণ তাকে ‘বঙ্গমাতা’ উপাধিতে ভূষিত করে। বঙ্গবন্ধুর জীবনে বঙ্গমাতা যেমন আলোকবর্তিতা, তেমনি আমাদের স্বাধীনতা ও দেশের মানুষের জন্য তার অবদান অনন্য অবিস্মরনীয়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত বেশি আলোচনা হবে, বঙ্গমাতার অবদান তত বেশি উদ্ভাসিত হবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার নাম চিরভাস্বর হয়ে থাকবে। সর্বজন শ্রদ্ধেয় মহিয়সী এ নারীর জন্মদিনে তার প্রতি রইলো গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

#Bangamata #SheikhFazilatunnesaMujib #বঙ্গমাতা #শেখফজিলাতুন্নেছামুজিব #Bangladesh

Courtesy: RTV, Tottho Apa Project, BFF

ছবি
প্রকাশের তারিখ
08/08/2021
আর্কাইভ তারিখ
31/08/2021